কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের দেশের জন্য কলা খুব সহজ একটি খাবার । কলা হচ্ছে উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন ফল গুলোর মধ্যে অন্যতম ১০০ গ্রাম কলা থেকে আমরা প্রায় ৯০ ক্যালরি পেয়ে থাকি। এছাড়াও কলাতে খুব ভালো অ্যামাউন্টের হেলথ বেনিফিটিং এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে ।
কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ শর্করাসমূহ । কলা খেলে পেট ভরা থাকে খিদে কমে যায় । বিশেষ করে আমরা যারা ফুটবল খেলি তাদের জন্য কলা খুব উপকারী একটা ফল কলা খেলে শরীরে এনার্জি পাওয়া যায় এবং খিদে ও মিটে যায় । যার কারণে আমরা খেলার সময় শরীরে এক্সট্রা একটা এনার্জি পায় । এছাড়া কলা আমাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ফেলে । দেহের এমন কিছু সমস্যা রয়েছে যা রোধে ওষুধের থেকে কলা অনেক বেশি কার্যকরী। কলার মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ এটি খেতেও বেশ মজাদার।সম্প্রতি একটি গবেষণায় বলা হয়েছে এই ফল নারীর ঋতুস্রাবের সমস্যা সমাধান করে এবং দেহের শক্তি যোগায়। কলায় থাকা প্রচুর পরিমান ফাইভ এর বিভিন্ন রোগ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
কলা খাওয়ার ১০ টা উপকারিতা
কলার ১০ গুণ, শুনতে কিছুটা অবাক হলেও দেহের এমন কিছু রোগ রয়েছে যা রোধে ওষুধের থেকে কলা অনেক বেশি কার্যকরী। তাহলে চলুন জেনে নিই কি এমন ১০ টি আশ্চর্য উপকারিতা.
1. কলা শক্তির অত্যন্ত ভালো উৎস। যার কারণে বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই প্রতিদিনই তাদের খাদ্য তালিকায় রাখে ১ টি কলা ।
2. কলার মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড, যেটি মানসিক চাপ রোধক হিসেবে কাজ করে । এর মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম যা বিষণ্নতা রোধে কাজ করে।
3. কলার মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ লবণ যা হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও আনতে সাহায্য করে থাকে ।
4. প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া আপনার স্মৃতিশক্তিকে বৃদ্ধি করতে প্রচুর সাহায্য করবে ।
5. কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং যেসব রোগীর রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া রোগ রয়েছে তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী একটি ফল।
6. কলা দেহের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
7. সন্তান সম্ভাবনা নারীর জন্য কলা খাওয়া খুবই উপকারী কেননা এটি সকালবেলায় দুর্বলতা কাটাতে কাজ করে এবং রক্তের শর্করার সামঞ্জস্য বজায় রাখে।
8. কলা পাকস্থলীর এসিড কে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাকস্থলীর আলসার রোধে কাজ করে থাকে।
9. এর মধ্যে ৬ ধরনের ভিটামিন রয়েছে যা রক্তের শর্করা গঠনে কাজ করে থাকে ।
10. এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, রোজ সকালে একটি পাকা কলা খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে এবং শরীর থাকবে তরতাজা।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা একটি পুষ্টিকর ফল যা দিনের যে কোনো সময় খাওয়া যায়। তবে রাতে কলা খাওয়ার কিছু বিশেষ উপকারিতা রয়েছে।
1. কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা মাংসপেশী শিথিল করতে সহায়তা করে। এটি ঘুমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মাংসপেশী শিথিল হলে আমাদের শরীর সহজেই বিশ্রাম নিতে পারে এবং গভীর ঘুমে যেতে সক্ষম হয়।
2.কলা একটি প্রাকৃতিক সেরোটোনিন বুস্টার। সেরোটোনিন হলো একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা মস্তিষ্কে সুখ এবং প্রশান্তির অনুভূতি সৃষ্টি করে। সেরোটোনিন পরে মেলাটোনিনে রূপান্তরিত হয়, যা আমাদের ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে রাতে কলা খেলে ঘুমের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।
3. কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। রাতে হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য খাবার খাওয়া ভালো, কারণ এটি আমাদের পাকস্থলীকে আরাম দেয় এবং রাতভর হজমের সমস্যা থেকে রক্ষা করে। কলা এমন একটি ফল যা সহজেই হজম হয় এবং পেটকে আরাম দেয়।
4.কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কলায় থাকা প্রাকৃতিক শর্করা আমাদের শরীরকে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে, যা রাতের সময় প্রয়োজনীয়। এটি রাতের বেলা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে, ফলে অযথা খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
এবং আমরা এটা বুঝতে পারলাম যে রাতে কলা খাওয়া একটি সহজ এবং কার্যকর উপায় হতে পারে ভালো ঘুম এবং সুস্থ স্বাস্থ্যের জন্য।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা একটি পুষ্টিকর ফল যা সকালে খাওয়া বিশেষ উপকারী। সকালের নাস্তা দিনে আমাদের প্রথম খাবার এবং এটি আমাদের সারাদিনের কার্যক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকালে কলা খাওয়ার কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো:
1.কলায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক শর্করা রয়েছে যা আমাদের শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে। সকালে এই শক্তি আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের বিভিন্ন কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয়।
2.কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা আমাদের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। ফাইবার আমাদের পাচনতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে এবং পেটের সমস্যা দূর করে। সকালে কলা খেলে সারাদিন হজমের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
3.কলা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। সকালে খালি পেটে কলা খাওয়া পেটের অম্লতা কমায় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে।
4.কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে যা আমাদের হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও, কলায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি৬ আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মেজাজ উন্নত করে।
5.কলা খেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরে থাকে। এটি আমাদের অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সকালে কলা খেলে আমরা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকতে পারি এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।
এবং আমরা বুঝতে পারলাম সকালে কলা খাওয়া একটি সহজ এবং পুষ্টিকর উপায় যা আমাদের সারাদিনের কাজের জন্য শক্তি ও সুস্থতা প্রদান করে।
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা
কলা একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল যা সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। নিয়মিত কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শক্তি বৃদ্ধি কলায় কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকায় এটি শরীরের শক্তি বাড়ায়। ব্যায়ামের আগে বা পরে একটি কলা খেলে তা দ্রুত শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
হজমশক্তি উন্নতি কলায় ফাইবার রয়েছে যা হজমশক্তি উন্নত করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কলায় পটাশিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত কলা খাওয়া উপকারী।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো কলার উচ্চ পটাশিয়াম এবং নিম্ন সোডিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি হৃদপিণ্ডের জন্য স্বাস্থ্যকর।
মেজাজ উন্নতি কলায় ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে যা মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করে এবং ডিপ্রেশন কমায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ কলায় ক্যালোরি কম থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
নিয়মিত কলা খাওয়া স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কলা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
রবিন ডাইরি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url