ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ড্রাগন ফল একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, আঁশ, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। 
ড্রাগন ফল হজমশক্তি উন্নত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায় এটি ওজন কমাতে সহায়ক। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ফলটি কার্যকর। 

ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ড্রাগন ফল এক ধরনের ফরিমন স্বপ্নজাতির ফল । ডিম্বাকৃতি উজ্জ্বল গোলাপি রঙের এই ফলের নাম শুনলে কেমন জানি অদ্ভুত মনে হয়। এ আবার কেমন ফল এটা কি আদৌ খাবার উপযোগী কিনা মনে সন্দেহ জাগে কিন্তু এই ফল আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

এই ফল চাষ করে অনেকেই কোটিপতি হচ্ছে চীনের লোকেরা এটিকে ফায়ার ড্রাগন ফ্রুট এবং ড্রাগন পাওয়ার ফ্রুট বলে। থাইল্যান্ডে ড্রাগন ক্রিস্টাল ভিয়েতনামে সুইট ড্রাগন ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া তে ড্রাগন ফ্রুট নামে পরিচিত অন্যান্য দেশের দেশীয় নাম হলো স্ট্রবেরি নাশপাতি ড্রাগন গাছ দেখতে একদম ক্যাকটাসের মত ফিক্স ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হয়। গাছ দেখে অনেকেই একে চির সবুজ ক্যাকটাস বলেই মনে করেন। ডিম্বাকৃতির উজ্জ্বল গোলাপি রঙের এশিয়ার মানুষের কাছে এ ফল অনেক জনপ্রিয় হালকা মিষ্টি মিষ্টি এই ফলের খোসা নরম এটা কাটলে ভিতরটা দেখতে লাল বা সাদা রঙের হয়ে থাকে এবং ফলের মধ্যে কালোজিরার মত ছোট ছোট নরম বীজ থাকে। নরম শাঁস ও নিষ্ঠুর গন্ধযুক্ত গোলাপী বর্ণের এই ফল খেতে অনেক সুস্বাদ । ড্রাগন ফল দেখতে খুবই সুন্দর ও অত্যন্ত আকর্ষণীয় পাতা বিহীন এই ফলটি দেখতে ডিম্বাকার এবং উজ্জ্বল গোলাপী বা লাল রঙের

ড্রাগন ফল খাওয়ার ১০ উপকারিতা

  1. একটি ড্রাগন ফলে ৬০ ক্যালোরি এবং প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন সি ওমেগা ৩ ওমেগা ৯ থাকে এই ফলে বিটা কেরোটিন ও লাইকোপিনের মত এনটিপসিডেন্ট রয়েছে বিটা কারো টেন শরীরে ভিটামিন এতে রূপান্তরিত হয়ে ।
  2.  ড্রাগন ফল আমাদের ত্বক চোখ ও ইমেল সিস্টেমের উন্নতি করে ।
  3. কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে একটি ড্রাগন ফলের প্রায় ৭ গ্রাম ভাইভা থাকে যার দৈনিক সুপারিশকৃত পরিমাণের চার ভাগের এক ভাগে। এটা অন্ত্রের বর্জ্য দূরীকরণে সহায়তা করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত অসুখ আছে তারা এই ফল খেলে উপকার পেতে পারে।
  4. হার্টের উপকার করে ড্রাগন ফলের বীজে হাটের জন্য উপকারী ওমেগা ৩ ওমেগা ৯ ফ্যাটি এসিড রয়েছে ড্রাগন ফলের ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডে প্রতারণার শক উপাদান রয়েছে এ কারণে এই ফল খেলে হার্টের রোগের ঝুঁকি ও জয়েন্টের ব্যথা কমে যায়। ড্রাগন ফল খেলে বিষন্নতাও কমতে পারে।
  5. হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। অধিকাংশ ফলের চেয়ে ড্রাগন ফলে ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকে এটা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে ও অষ্টপ্রোসিস প্রতিরোধ করে এক পার্টির ড্রাগন ফলে দৈনিক সুপারস্কৃত ম্যাগনেসিয়ামের প্রায় ১৮% পাওয়া যায়। মাসিক চক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এমন নারীদের হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ড্রাগন ফল বিশেষ সহায়ক হতে পারে ।
  6. রক্ত চলাচল বজায় রাখে নারীদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি দেখা যায় মাংস মাছ বাদাম ও ডাল জাতীয় খাবার থেকে আমরা অধিকাংশ আয়রন গ্রহণ করে থাকি । মাত্র কিছু ফলে উচ্চ পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এসব ফলের একটি হলো ড্রাগন ফল ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ১.9 মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার ১০ শতাংশেরও বেশি। হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের জন্য আয়রন প্রয়োজন যা শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন পৌঁছাতে লোহিত রক্ত কণিকাকে সাহায্য করে।
  7. চুল পড়া প্রতিরোধ করে। আয়রন ঘাটতি কারণে চুল পড়া সমস্যা হতে পারে, নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে চুল পড়া কমতে পারে। এছাড়া এই ফল আয়রন ঘাটতি জনিত রক্তাল্পতার অন্যান্য উৎসর্গ প্রশমিত করতে পারে, যেমন অত্যাধিক ক্লান্তি ত্বকের বিবর্ণতা মনোনিবেশের সমস্যা মাথা ব্যথা ও হাত-পায়ে ঠান্ডা অনুভূতি ।
  8. ইমিন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। ভাইরাস সংক্রমণে আমরা সাধারণত কমলার মত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের দিকে ঝুঁকে পড়ি কারণ ভিটামিন সি ইমিন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। কিন্তু ইমিন সিস্টেমের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ডায়েটের ড্রাগন ফলকে রাখার কথা ও বিবেচনা করতে পারেন। এতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে অক্সিডেটির স্ট্রেসজ জনিত ক্ষয় ক্ষতিয়াড়াতেও যে এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রয়োজন তা ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডের একটি প্রাচুর্যপূর্ণ উৎস হল ড্রাগন ফল ।
  9. শরীরের জন্য ক্ষতিকর ও উপকারী ব্যাক্তিটি আর সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে ড্রাগন ফল ।
  10. আয়রনের চমৎকার উচ্চ রঙিন ড্রাগন ফল রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর করতে চাইলে প্রতিদিন খাওয়া উপকারী এই ড্রাগন ফল ।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফল একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল যা নিয়মিত খেলে শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে। এই ফলটি খেতে গেলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। ড্রাগন ফল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কঠিন নিয়ম নেই, তবে এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা ঠিকভাবে পেতে কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করা যেতে পারে।

প্রথমেই, ড্রাগন ফল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। কারণ, এর বাইরের অংশে ধূলা বা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এরপর ফলের উপরের অংশ কেটে নিয়ে, ভেতরের সাদা বা লাল মাংসজাত অংশটুকু তুলে খাওয়া হয়। ফলটি এমনিতেই মিষ্টি, তাই এর সঙ্গে কোনো মিষ্টির প্রয়োজন হয় না।

সকালের নাশতায় ড্রাগন ফল খাওয়া বিশেষ উপকারী হতে পারে। এতে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরকে সতেজ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। খালি পেটে এই ফল খেলে হজমের প্রক্রিয়াও ভালো থাকে এবং শরীর সহজে পুষ্টিগুণ শোষণ করতে পারে।

অনেকেই ড্রাগন ফলকে সালাদের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেন। দই বা অন্যান্য ফলের সাথে মিশিয়ে এই ফলটি একটি মজাদার ও স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করা যায়। এটি স্মুদি বা জুস হিসেবে পান করলেও পুষ্টিগুণ একই থাকে। ড্রাগন ফলের সিডগুলো হালকা চিবিয়ে খেলে হজমে সহায়ক হয়, কারণ এতে ফাইবার প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, যা পেট পরিষ্কার রাখে।

ড্রাগন ফল দিনে একবার বা দুবার খাওয়া যায়, তবে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। যারা ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো বিশেষ রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফলটি খাওয়া উত্তম।

অতিরিক্ত মিষ্টি ফল না হলেও, যারা ডায়েটে আছেন, তারা এটি পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন। ড্রাগন ফলে ক্যালোরির পরিমাণ কম, তাই ওজন কমানোর ডায়েটের জন্যও এটি উপযুক্ত।

তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, ফলটি ফ্রেশ অবস্থায় খাওয়া উত্তম। ড্রাগন ফল কাটার পর যদি রেখে দেওয়া হয়, তাহলে দ্রুত খাওয়া উচিত, নাহলে ফলের স্বাদ ও পুষ্টি কমে যেতে পারে।

সাধারণত এই ফল ঠান্ডা পরিবেশন করা হয়, কারণ এটি তাজা ও ঠান্ডা অবস্থায় বেশি সুস্বাদু লাগে। যেকোনো তাজা ফলের মতো ড্রাগন ফলও অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত না করে খাওয়া ভালো।

ড্রাগন ফল খেলে শরীরের ত্বক ও চুলের জন্যও উপকার পাওয়া যায়, কারণ এতে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান প্রচুর থাকে। নিয়মিত খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও চুল মজবুত হতে সাহায্য করে।

সবশেষে, ড্রাগন ফল খাওয়ার সময়ে মনোযোগ দিতে হবে ফলটি যেন ভালোভাবে পাকা হয়। অপরিপক্ক ফল খেলে স্বাদ কম পাওয়া যায় এবং পুষ্টিগুণও ঠিকমতো পাওয়া যায় না।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

রবিন ডাইরি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url